DDR Capsule কিসের ঔষধ, কাজ কি ও দাম কত?

বর্তমান সময়ে, বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য অনেক ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে DDR Capsule একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ যা চিকিৎসকদের পরামর্শে রোগীরা গ্রহণ করে থাকেন। এই নিবন্ধে আমরা বিস্তারিত জানব DDR Capsule কিসের ঔষধ, এটি কিভাবে কাজ করে, এর মূল উপাদান, দাম এবং আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

DDR Capsule এর কাজ কি?

DDR Capsule মূলত গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল (পাচনতন্ত্রের) সমস্যার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি পাকস্থলীর অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণ কমিয়ে দেয় এবং গ্যাস্ট্রিক ও অম্বল সমস্যার সমাধান করে। এই ক্যাপসুল মূলত Proton Pump Inhibitor (PPI) হিসেবে কাজ করে, যা পাকস্থলীর অ্যাসিড নিঃসরণকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা কমায়। ফলে এটি গ্যাস্ট্রিক আলসার, গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD) এবং অম্বলের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

DDR Capsule এর প্রধান কাজগুলো:

  • পাকস্থলীর অ্যাসিড নিঃসরণ কমানো।
  • গ্যাস্ট্রিক আলসার নিরাময়ে সহায়তা করা।
  • GERD-এর উপসর্গ হ্রাস করা।
  • হজম প্রক্রিয়া উন্নত করা।
  • অম্বলের সমস্যা দূর করা।

DDR Capsule কিসের জন্য ব্যবহৃত হয়?

DDR Capsule বিভিন্ন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। নিচে এর ব্যবহারের কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হলো:

  1. গ্যাস্ট্রিক আলসার: পাকস্থলীর অভ্যন্তরীণ প্রাচীরের ক্ষত নিরাময়ে এটি কার্যকর।
  2. অম্বল ও বুকজ্বালা: অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে সৃষ্ট সমস্যা দূর করতে DDR Capsule খুব কার্যকর।
  3. GERD (গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ): পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীর দিকে উঠে যাওয়ার সমস্যায় এটি ব্যবহৃত হয়।
  4. ডিওডেনাল আলসার: ডিওডেনামের (ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রথম অংশ) ক্ষত নিরাময়ে এটি ব্যবহার করা হয়।
  5. NSAIDs-এর কারণে সৃষ্ট গ্যাস্ট্রিক সমস্যা: যাঁরা নিয়মিত পেইন কিলার গ্রহণ করেন, তাঁদের মধ্যে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা নিরাময়ে এটি ব্যবহৃত হয়।

DDR Capsule এর উপাদান ও কাজ

DDR Capsule-এর প্রধান সক্রিয় উপাদান হলো Dexlansoprazole। এটি Proton Pump Inhibitor (PPI) নামে পরিচিত একটি শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। Dexlansoprazole পাকস্থলীর প্রোটন পাম্পগুলোর কার্যক্ষমতা বন্ধ করে দেয়, ফলে অ্যাসিড নিঃসরণ কমে যায়।

উপাদানগুলোর কার্যকারিতা:

উপাদানকার্যকারিতা
Dexlansoprazole 30 mg/60 mgপাকস্থলীর অ্যাসিড নিঃসরণ কমিয়ে গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান করে
অপ্রয়োজনীয় ফিলারক্যাপসুলের গঠন বজায় রাখতে সাহায্য করে

Dexlansoprazole-এর দুটি আলাদা রিলিজ মেকানিজম রয়েছে যা দিনের বিভিন্ন সময়ে অ্যাসিড নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর।

DDR Capsule এর সঠিক ডোজ এবং ব্যবহারবিধি

DDR Capsule শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণ করা উচিত। ভুল ডোজ বা অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।

ডোজ:

  1. গ্যাস্ট্রিক আলসার বা GERD-এর জন্য:
    • প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য: প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম বা ৬০ মিলিগ্রাম।
    • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ৪-৮ সপ্তাহ পর্যন্ত গ্রহণ করতে হয়।
  2. ডিওডেনাল আলসার:
    • প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম।

ব্যবহারবিধি:

  • খালি পেটে ওষুধ গ্রহণ করুন।
  • ক্যাপসুলটি ভেঙে বা চিবিয়ে খাবেন না।
  • পানি দিয়ে সেবন করুন।
  • ডোজ মিস হলে তা পরবর্তী সময়ে গ্রহণ করবেন না।

DDR Capsule এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

যেকোনো ওষুধের মতো DDR Capsule-এরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তবে এগুলো খুব সাধারণ এবং সাময়িক।

সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

  • মাথা ঘোরা।
  • বমি বমি ভাব।
  • ডায়রিয়া।
  • পেট ফাঁপা।
  • ত্বকের অ্যালার্জি।

গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (দুর্লভ):

  • তীব্র পেটে ব্যথা।
  • মলদ্বারের রক্তপাত।
  • লিভার বা কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস।

যদি কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

DDR Capsule এর দাম কত?

DDR Capsule বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং ডোজ অনুযায়ী পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে DDR Capsule এর দাম:

নামডোজদাম (প্রতি পাতা)
DDR 30 mg Capsule৩০ মিলিগ্রামপ্রায় ৯০-১১০ টাকা
DDR 60 mg Capsule৬০ মিলিগ্রামপ্রায় ১৭০-২০০ টাকা

দামের পরিবর্তন হতে পারে এবং তা নির্ভর করে ফার্মেসি ও এলাকার ওপর।

DDR Capsule ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

DDR Capsule গ্রহণের আগে এবং পরে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি:

ব্যবহারকালীন সতর্কতা:

  • গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মায়েদের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা উচিত নয়।
  • যদি আপনি কিডনি বা লিভারের কোনো সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে ডোজ নির্ধারণের জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
  • দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাকশন:

DDR Capsule কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ:

  • অ্যান্টিবায়োটিক।
  • অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ।
  • ওয়ারফারিন বা রক্ত পাতলা করার ওষুধ।

DDR Capsule এর বিকল্প ওষুধ

DDR Capsule-এর বিকল্প হিসেবে বাজারে আরও কিছু ওষুধ পাওয়া যায়। তবে সেগুলো ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বিকল্প ওষুধ:

  1. Esomeprazole।
  2. Lansoprazole।
  3. Omeprazole।
  4. Pantoprazole।

উপসংহার

DDR Capsule হলো এমন একটি কার্যকর ওষুধ, যা গ্যাস্ট্রিক ও পাচনতন্ত্রের সমস্যার নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। সঠিক সময়ে এবং সঠিক ডোজে এটি গ্রহণ করলে, গ্যাস্ট্রিক আলসার বা GERD-এর মতো সমস্যাগুলোর থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে ওষুধটি গ্রহণের আগে এবং ব্যবহারকালীন সময়ে চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজারে এর বিকল্প ওষুধ থাকলেও, নিজের শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে সঠিক ওষুধ নির্ধারণ করা উচিত। DDR Capsule এর কাজ কি এই বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে বোঝার জন্য এবং এটি থেকে সঠিক উপকার পেতে, রোগীদের সচেতন থাকা প্রয়োজন। আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন হোন এবং যে কোনো প্রশ্ন বা উদ্বেগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top