জিহ্বায় ঘা এর ঔষধ এর নাম, কারণ এবং ঘরোয়া উপায়

মুখের ভেতর, বিশেষ করে জিহ্বায় ঘা হওয়া খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে “এপথাস আলসার” (Aphthous ulcer) বলা হয়। যদিও এটি জীবনঘাতী কোন রোগ নয়, তবুও এই ঘা অনেক অস্বস্তি এবং কষ্টের কারণ হতে পারে। খাবার খাওয়া, কথা বলা এমনকি পানি পান করার ক্ষেত্রেও এটি ব্যথা এবং জ্বালা তৈরি করে। সাধারণত এই ফোসকা বা ক্ষত জিভের উপরে বা জিভের পিছনে এবং জিভির তলায় দেখা দিতে পারে। এই ক্ষত গুলো খুবই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে। সাধারণত ক্ষতগুলো লাল রঙের দেখা যায় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো সাদা বা হলদের রংয়ের হয়ে থাকে।

সাধারণত এই ফোসকা বা ক্ষত জিভের উপরে বা জিভের পিছনে এবং জিভির তলায় দেখা দিতে পারে। এই ক্ষত গুলো খুবই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে। সাধারণত ক্ষতগুলো লাল রঙের দেখা যায় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো সাদা বা হলদের রংয়ের হয়ে থাকে। তবে জেনে রাখা ভালো অনেক সময় এই ঘা থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে ।

জিব্বা, যা মুখে গা বা মুখে আঘাত বা দর্দ সহ অনুভব করা হয়, প্রায়শই মৌখিক স্বাস্থ্য সমস্যার সূচক হতে পারে, এবং এটির লাক্ষণ গতিতে বেড়ে যেতে পারে। জিব্বার কারণ বুঝতে এবং যত্ন নেওয়ার জন্য সর্বপ্রথম একজন চিকিৎসকে দেখানো উচিত। চিকিৎসক আপনার জিব্বার কারণ পর্যালোচনা করে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পরিচালনা করবেন।

মুখে ঘা কেন হয়

মুখে ঘা হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, বিশেষ করে রিবোফ্লাভিন (ভিটামিন বি২) এবং ভিটামিন সি এর অভাব মুখে ঘা হওয়ার একটি প্রধান কারণ। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, পেটের অম্ল বৃদ্ধি, খাবার হজম না হওয়া ইত্যাদি পেটের গোলযোগ মুখে ঘা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। দাঁত ব্রাশ করার সময় বেশি জোরে ঘষা, কোন কঠিন খাবার কাঁচা ইত্যাদি কারণে মুখের ভেতর ক্ষত হলে সেখানে ঘা হতে পারে। এছাড়াও মানসিক চাপ, হরমোনের পরিবর্তন, কিছু কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, এলার্জি ইত্যাদি মুখে ঘা হওয়ার কারণ হতে পারে। ধূমপান , মদ্যপান এর কারনেও হতে পারে । তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভিটামিন আয়রন এর জন্যেই হয় । ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে মুখে ঘা হতে পারে ।

মুখে ঘা এর ঔষধের নাম

মুখে ঘা সারানোর জন্য বিভিন্ন রকমের ঔষধ ব্যবহার করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রিবোফ্লাভিন জাতীয় ঔষধ খাইলে এর থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিছু প্রচলিত ঔষধ হল:

  • রিবোফ্লাভিন ট্যাবলেট: রিবোফ্লাভিন ট্যাবলেট সরাসরি খাওয়া যায় অথবা এটি পানিতে গুলে কুলকুচি করা যায়। এটি ঘা শুকাতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন সি ট্যাবলেট: ভিটামিন সি ঘা সারাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট: ভিটামিন বি কমপ্লেক্স মুখের ঘা প্রতিরোধে এবং সারাতে কার্যকরী।
  • বরোগ্লিসেরিন: বরোগ্লিসেরিন ঘা এর উপর লাগালে ব্যথা কমে এবং ঘা শুকাতে সাহায্য করে।

মুখে ঘা সারানোর ঘরোয়া উপায়

ঔষধের পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে মুখের ঘা সারাতে সাহায্য হয়। যেমন:

  • লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি করলে মুখের ভেতর জীবাণু নিরোধ হয় এবং ঘা শুকাতে সাহায্য হয়।
  • টক দই এর মধ্যে থাকা ল্যাক্টিক এসিড ঘা সারাতে সাহায্য করে।
  • মধু এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ ঘা এর সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং সারাতে সাহায্য করে।
  • নারিকেল তেল এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ ঘা এর ব্যথা এবং জ্বালা কমাতে সাহায্য করে।
  • ঘা এর উপর ঠান্ডা কম্প্রেস দিলে ব্যথা এবং জ্বালা কমে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

মুখের ঘা সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়। ঘা এর উপর অতিরিক্ত চাপ দেওয়া বা ঘষা থেকে বিরত থাকুন। মসলাযুক্ত এবং অতিরিক্ত গরম খাবার এড়িয়ে চলুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। যদি ঘা বেশি দিন স্থায়ী হয় বা অস্বস্তি বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

শেষ কথা

আশা করি এই তথ্যগুলো আপনার জন্য উপকারী হবে। মনে রাখবেন, সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করতেছি আমাদের এই আর্টিকেল থেকে জিহ্বায় ঘা এর ঔষধ এর নাম, কারণ এবং ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। যদি আর্টিকেল আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই আপনার আশেপাশের ব্যক্তিদেরকে শেয়ার করে জানিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top